মূলত রুকইয়াহ রিলেটেড কথা-বার্তা বলার জন্য লিখছি। কিন্তু অন্য কথাও আলোচনা করা যাক প্রথমে।
জীবনে কখনও মুখে ব্রন হয়নি এমন মানুষ পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ আছে আমার। অনেকের শুধু মুখে নয় শরীরের অন্য জায়গাতেও ব্রনের মত বের হয়। এটা একটা বিরক্তিকর সমস্যা তাতে কোন সন্দেহ নেই। গোলগাল গ্লেসি চেহাড়া ব্রনের কারণে বিদঘুটে হয়ে উঠে বিধায় নারীজাতীর অন্যতম শত্রু এই ব্রন!
১। খাওয়ার অভ্যাসঃ খাওয়ার অভ্যাসে গোলমাল করে ব্রন উঠতে পারে মুখে। কাজেই সহজে হজম হয় এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত। ভাজা, পোড়া, বাইরের খাবার সীমিত পর্যায়ে রাখা উচিত।
২। ঘুমের অভ্যাসঃ রাতে ঘুমের অভ্যাস করুন। একটানা ৬ ঘন্টা যেন ঘুমাতে পারেন সে দিকে খেয়াল রাখবে। সারাদিনে ৬ ঘন্টা না, রাতে ৬ ঘন্টা। এগারোটার দিকে শুয়ে পড়লে আরামসে ৬ ঘন্টা ঘুমুতে পারবেন।
৩। কসমেটিক্সঃ যদি এমন কেসমেটিক্স ব্যবহার করেন যা আপনার স্কিনের সাথে যায় না তাহলেও ব্রন হতে পারে। এমনঅবস্থায় কসমেটিক্সে পরিবর্তন আনুন। যারা হোমমেড প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন তারা অন্যভাবে তৈরি করা কোন প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। অনলাইনে এই ব্যাপারে যথেষ্ঠ রিসোর্স পাবেন।
৪। পরিচ্ছন্নতাঃ বাইরে থেকে ঘরে এসে সাথে সাথে ত্বক পরিষ্কার করুন। সাবান দিয়ে বা সোপ টাইপের যেসব ফেসওয়াশ পাওয়া যায় তা দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন যত্ন করে। ধুলো-বালি, তেল-কালি ত্বক থেকে চলে গেলে ব্রন হবার প্রবনতা কমে যাবে ইন শা আল্লাহ।
৫। সুরক্ষাঃ প্রখর সূর্যালোক, সূর্য্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে বাচতে ছাতা ব্যবহার করুন। বর্তমানে ছাতাগুলোতে অতিবেগুনী রশ্মি প্রটেকশনের ব্যবস্থা থাকে। মেয়েরা যারা নেকাব করে তারা সুরক্ষার দিক দিয়ে এগিয়ে আছেন কোন সন্দেহ নেই।
৬। ডাক্তার দেখানোঃ জ্বি, কোন স্কিন বিশেষজ্ঞের কাছেও পরামর্শ নিতে পারেন।
৭। হরমোনালঃ বয়ঃসন্ধিতে ব্রন একটা কমন বিষয়। এটা নিয়ে খুব বেশি দুঃশ্চিন্তার কিছু নেই। শরীরের ঘটন পূর্ণ হলেই ইনশাআল্লাহ ব্রন চলে যাবে।
এবার আসি ব্রন হলে কি রুকইয়াহ করবেন সে বিষয়ে। উপরের পয়েন্টগুলো ফলো করার পরেও যদি ব্রনের সমস্যা থেকেই যায় তাহলে রুকইয়াহ করতে পারেন। যদি প্যারানরমাল কোন কারনে ব্রনের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে ব্রন চলে যাবে ইন শা আল্লাহ। উল্লেখ্য, রুকইয়াহতে কোন ক্ষতি নেই। সমস্যা থাকলে উপকার পাবেন বা ইফেক্ট বোঝা যাবে কিন্তু কোন ক্ষতির সম্মুখিন হবেন না ইন শা আল্লাহ।
প্রথমে আপনি নিজের অযুর পানি দিয়ে গোসল করেন। অযুর ব্যবহার করা পানি একটা পাত্রে নিয়ে গোসলের আগে সেই পানি গায়ে ঢেলে দিন। এরপর স্বাভাবিক গোসল করবেন। যদি আপনার নিজের নজর নিজেকে লেগে থাকে তাহলে বদনজর কেটে যাবে ইন শা আল্লাহ। যদি মনে করেন আপনার বাবা, মা, ভাই,বোন বা অন্য কারও নজর লেগেছে তাহলে তার অযুর পানি যোগাড় করেও একইভাবে গোসল করতে পারেন। একাধিক ব্যক্তির অযুর পানি একই সাথে নিয়ে গোসল করতে পারবেন।
এভাবে করতে বলছি কারন হল, আমার এক নিকট আত্মীয়ার বিয়ের আগে অনেক সুন্দর চুল ছিল। কিন্তু বিয়ের পর চুল পড়ে শেষ। হয়ত হাজবেন্ড বা শ্বশুড়বাড়ির কারও নজর লেগেছিল, তাই চুল পড়ে শেষ ( আল্লাহই ভাল জানেন)। আর আশেপাশের লোকজনেরইতো নজর লাগার সম্ভবনা বেশি। আপনি থাকেন বাংলাদেশে, আপনি যতই এক্সেপশনাল হোন না কেন আপনার নিশ্চয়ই ডোনাল্ড ট্রাম্পের নজর লাগবে না, তাই না? এভাবে করা সম্ভব হলে করবেন, ঝগড়া-ঝাটি করে কারও অযুর পানি আনার দরকার নেই। একই লোকের অযুর পানি দিয়ে একাধিকবার গোসলের দরকার নেই। একবার করাই যথেষ্ঠ ইন শা আল্লাহ। যদি পুনরায় নজর লাগে তখন আবার করবেন।
যদি এরপরও উন্নতি না দেখেন আপনি নিচের লিংকের নিয়মে রুকইয়াহ করতে পারেন ১৫ দিন। নজরের রুকইয়াহ করলে শরীর খারাপ করতে পারে। তখন অফ করা যাবে না। বরং বুঝতে হবে রুকইয়াহ কাজ শুরু করেছে। (মেয়েদের ক্ষেত্রে যদি পিরিয়ড শুরু হয় তাহলে রুকইয়াহ অডিও শুনতে পারবে। তবে পানি অন্য কেউ পড়ে দিবে) গায়ে/ঘরে কোণ তাবিজ থাকলে খুল নষ্ট করে তওবা করে তারপর করবেন। নিচের লিংকে বিস্তারিত।
যদি ব্রন বেড়ে যায় তাহলে আরও ১৫ দিন করবেন।
১ মাস শেষ হবার পর কি অবস্থা খেয়াল করবেন। বদনজরের অডিও শুনলে ইফেক্ট যদি না হয় তাহলে বদনজরের রুকইয়াহ আর করবেন না। যদি ইফেক্ট হয় (মানে খারাপ লাগে যেটা নরমালি লাগার কথা না) তাহলে কন্টিনিউ করবেন। যখন আর ইফেক্ট হবে না তখন বুঝবেন আল্লাহর হুকুমে বদনজরের প্রভাব কেটে গিয়েছে।
বদনজরের প্রভাব কেটে যাবার পরেও যদি দেখেন যে ব্রন কমছে না তাহলে নিচের লিংকের দুআ'গুলো পড়ে ডাক্তারের অষুধে/ব্যবহৃত প্রসাধনীতে ফু দিয়ে খাবেন / ব্যবহার করবেন।
এভাবে চালিয়ে যাবেন। আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দুয়া করবেন। নামায ও পর্দা ঠিকমত করবেন। সকাল, সন্ধ্যা ও ঘুমের আগের মাসনুন আমল প্রতিদিন করবেন।
হিজামাও করাতে পারেন ব্রন অতিরিক্ত হলে। হিজামা কি জানতে গুগলে সার্চ করে দেখুন।
কেউ যদি ফলো করেন তাহলে আপডেট/অভিজ্ঞতা জানাতে ভুলবেন না।
নোটঃ প্রথমেই ধরে নিবেন না কারও বদনজরের কারনে আপনার এমন হয়েছে বরং সবকিছুই বিবেচনায় রাখবেন।