অমুসলিম হলে কি রুকইয়াহ করতে পারবে? কিভাবে করবে?

জ্বি, রুকইয়াহ সবাই করতে পারবে। মুসলিম/অমুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই এখানে। মুসলিমরা যেভাবে রুকইয়াহ করে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-অন্যরাও সেভাবেই কর...

Search This Blog

Monday, April 15, 2019

বদনজর এবং এর লক্ষন সমূহ

অতিসংক্ষেপে যদি বলতে চাই তাহলে বলতে হয় বদনজর হল অন্তরের এক প্রকার অসুখ যা তীব্রভাবে অন্যকে আক্রমন করে। অন্যের কোন অসাধারণ বিষয় দেখলে মানুষের মনে সাধারণত একটু ঈর্ষাভাব জন্ম নেয়। অন্যের নিয়ামত দেখে মানুষের মনে দুঃখবোধ জন্ম নেয়। সেটার দিকে বার বার তাকায়, বার বার প্রশংসা করে অথচ আল্লাহর নাম স্মরণ করে না। এভাবে এই নিয়ামত ক্ষয়প্রাপ্ত হয় বা ধ্বংস হয়ে যায়। একেই বদনজর বলে। বদনজর পরশ্রীকাতর ব্যক্তির অন্তর থেকে বের হওয়া এক বিষাক্ত তীর যা আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রচন্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। এই তীর কখনো লেগে যায়, কখনো মিস হয়। যদি উক্ত ব্যক্তি আগে থেকেই উদাসীন হয় তাহলে তীর লেগে যায়। আর যে সতর্ক থাকে আল্লাহ থাকে সাহায্য করেন, বাঁচিয়ে দেন। 

বদনজর থেকে বাঁচার জন্য কোন নেয়ামতের কথা বলার সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করতে হবে। যেমন, "আলহামদুলিল্লাহ আমার বাবু লেখাপড়ায় খুব ভাল।" "মা শা আল্লাহ, তোমার চুল খুব সুন্দর।" এভাবে কথা বললে ইন শা আল্লাহ বদনজর থেকে বাঁচা যাবে। যদি অন্য কেউ বলে অথচ আল্লাহর নাম না নেয় তাহলে যাকে বলা হচ্ছে সে বলবে। যেমন, কেউ যদি বলে "তোমার চুল তো খুব সুন্দর!" তাহলে বলব, "আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ দিয়েছেন।"

হাদিসের কিতাবে চিকিৎসা অধ্যায়ে বদনজর সম্পর্কে অনেক হাদিস এসেছে। কৌতুহলি কেউ একটু খুজে দেখলেই হবে। আমি আলাদা করে এর সত্যতা প্রমাণ করতে গেলাম না।

এভাবে আসি কিভাবে বুঝব আমার বদনজর লেগেছে কিনা। বোঝার জন্য বদনজরের লক্ষন পর্যালোচনা করা যাকঃ 

১। সারাবছর অসুস্থতা লেগেই থাকা। একটা সারতে না সারতে আবার অসুস্থ হয়ে পড়া।
২। অস্বাভাবিক চুল পড়া
৩। গায়ের রং আগের তুলনায় পরিবর্তন হয়ে যাওয়া। (হলদে/ধূসর হয়ে যাওয়া)
৪। একা একা থাকতে ভাল লাগা। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি বিরক্তি চলে আসা।
৫। অকারনে কান্না-কাটি করা। অযথাই ডিপ্রেসনে ভোগা।
৬। পেটে প্রচুর গ্যাস হওয়া, ক্ষুধামন্দা, কৌষ্ঠকাঠিন্যে ভোগা।
৭। মাথাব্যথা বিশেষ করে মাথার পিছনের দিকে ব্যথা করা। 
৮। পেট ব্যথা, হাত-পা, হাটুতে ব্যথা। সারা গায়ে ব্যথা দৌড়া-দৌড়ি করা। 
৯। শরীরের বিভিন্ন স্থানে র‍্যাশ উঠা। চর্মরোগ লেগেই থাকা।
১০। অযথাই বুক ধরফর করা, মাথা ঘোরানো, শরীর দুর্বল লাগা।
১১। দু'কাধ ভারী হয়ে থাকা , শরীর অবশ লাগা
১২। বমি বমি ভাব লেগেই থাকা। জ্বর জ্বর লাগা, কিন্তু মাপলে স্বাভাবিক।
১৩। বাইরে কাজ করতে পারে, ঘরে ফিরলেই প্রচন্ড ক্লান্ত অনুভব করা। 
১৪। যে কাজে আপনি দক্ষ সেই কাজ করতে না পারা।  হঠাৎ করে আয়-রোজগার থমকে যাওয়া। 
১৫। প্রায়শই স্বপ্নে সাপ, নেকাব পড়া মহিলা, কাউকে ধাওয়া করতে দেখা।  
১৬। বিছানায় সারা রাত এপাশ-ওপাশ করা, ঘুম আসতেই চায় না। 
১৭। শুয়ে থাকলে মনে হয় পাশে কেউ আছে, কোন ছায়া দেখতে পাওয়া
১৮। অহেতুক ভয় পাওয়া, নামাযে দাড়ালে ভয় বেড়ে যাওয়া। 
১৯। স্বপ্নে উপর থেকে পড়তে দেখা, উড়া-উড়ি করা। ডান কাধে শুলে ঘুম আসে না, বাম কাধে শুলে আসে- এমন হওয়া। 
২০। মন-মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া। 

এই লক্ষনগুলোর দুই একটা যদি মিলে যায় কারও সাথে তাহলে চিন্তার কিছু নেই। নামা ক্যর, যিকর-আযগার আর দুআ করতে থাকলেই ইন শা আল্লাহ ভাল হয়ে যাবেন। যদি বেশি মিলে যায় তাহলে রুকইয়াহ করা উচিত। কিভাবে রুকইয়াহ করবেন সেটা এখানে পাবেন।