বদনজরের আক্রান্ত ব্যক্তিকে যখন দুষ্ট জিন বিভিন্নভাবে কষ্ট দেয় তখন তাকে সহজ কথায় জিনের নজরে আক্রান্ত বলা যায়। তবে বদনজরের আক্রান্ত না হয়েও জিনের বদনজরে আক্রান্ত সম্ভব যেহেতু জিনেরা মানুষদের ঈর্ষা করে মানুষের উঁচু মর্যাদার কারনে। আর বদনজর অধ্যায়ে বলেছি বদনজরের অন্তরের রোগ; অন্তরের হিংসা-দ্বেষ-ঘৃনা থেকেই এর উৎপত্তি।
গ্রামাঞ্চলে এই ধরনের রোগীকে "বাতাস লেগেছে" বলে অভিহিত করা হয়।
বাতাস লাগা রোগীর লক্ষনগুলো বদনজরে আক্রান্ত রোগীর মতই। প্রশ্ন হলো কিভাবে বুঝব জিনের নজর নাকি সাধারন কোন মানুষের বদনজর?
কোন ব্যক্তির যদি জিনের নজর লাগে তাহলে বদনজরের লক্ষনগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে
- অহেতুক ভয় পাওয়া
- মনেহয় কেউ যেন আছে/কেউ তাকিয়ে আছে (নামাযে দাড়ালে বিশেষ করে এমন হওয়া)
- মনেহয় কোন ছায়া সরে গেল
- শরীর অস্বাভাবিক গরম থাকা
- স্বপ্নে নিজেকে উড়তে দেখা
- ঘুমের মধ্যে যেন উপর থেকে পড়ে যাচ্ছি এমন অনুভব হওয়া
- মাঝে মাঝে বোবায় ধরা
- নানা ধরনের ওয়াসওয়াসা নিজের মধ্যে তৈরি হওয়া
মিল থাকবে।
এর চিকিৎসা বদনজরের রুকইয়াহর মতই। বদনজরের রুকইয়াহ পাশাপাশি যে কাজগুলো করতে হবে তা হলঃ
১। প্রতিদিন সকালে সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করা।
২। প্রতিদিন রাতে সুরা মূলক তেলাওয়াত করা।
৩। দিনের অন্যান্য সময় সম্ভব হলে সুরা সফফাত, সুরা জিন, সুরা দুখান, সুরা যিলযাল, সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস একবার করে তেলাওয়াত করা।
৪। যদি কোন কিছুই তেলাওয়াত করা সম্ভব না হয় (সময় কম, উচ্চারন শুদ্ধ নেই, বা মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হলে) সেক্ষেত্রে এইগুলোর রেকর্ডিং শোনা। অনলাইনে অনেক সাইটে এইগুলো ডাউনলোড করতে পারবেন। সেরকমই একটি সাইট quranicaudio.com ।
এই বাইরে প্রতিদিন সমস্যা উল্লেখ্য করে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে দুআ' করা।
কমপক্ষে দুই সপ্তাহ একটানা রুকইয়াহ করা। এরমধ্যে প্রথমদিকে সমস্যা বাড়তে পারে। তখন হাল ছেড়ে না দেয়া। চালিয়ে যাওয়া তাহলে ইন শা আল্লাহ পূর্ণ সুস্থতা আসবে। দুই সপ্তাহ পর নিজের অবস্থা যাচাই করা যদি কিছু সমস্যা অবশিষ্ট থাকে তাহলে রুকইয়াহ চালিয়ে যেতে হবে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের তৌফিক দিন। আমীন।