জিন মানুষের কিভাবে ক্ষতি করে এবং কিভাবে সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠা যায় সেগুলো আলোচনার পূর্বে জিন নিয়ে সাধারন কিছু কথা জানা যাকঃ
১। জিনেরা আল্লাহ তায়ালার সৃষ্ট জিব। মানুষের মতই তাদের জন্ম, মৃত্যু রয়েছে।
২। জিনেরা মানুষকে দেখতে পায় কিন্তু মানুষ জিন দেখতে পায় না।
৩। তাদের বুদ্ধিমত্তা ও ভাল-মন্দ বাছাইয়ের স্বাধীনতা রয়েছে।
৪। জিনদের মধ্যে যারা আল্লাহর হুকুম মানবে তাদের জন্য পরকালে রয়েছে পুরস্কার এবং যারা আল্লাহর হুকুম অস্বীকার করবে তাদের জন্য থাকবে কঠোর শাস্তি।
৫। ধোয়াহীন আগুন থেকে জিনদের তৈরি করা হয়েছে।
৬। জিনেরা নিজেদের রূপ পরিবর্তনে সক্ষম। জিন যদি মানুষ বা অন্যকোন প্রানির রূপ ধারন করে তখন মানুষ জিন দেখতে পায়। মানুষ ছাড়া প্রানিকুলের মধ্যে কুকুর এবং গাধারা জিন দেখতে পায়।
৭। সব জিন খারাপ হয় না। জিনদের মধ্যে মানুষের মতই ভাল-মন্দ, মুসলিম-কাফির রয়েছে।
৮। সাধারনত জিনদের মধ্যে যারা সবচেয়ে খারাপ, দুর্ধর্ষ তাদের শয়তান বলা হয়। ইবলিস এমনই এক জিন।
৯। জিনেরা মানুষকে ভয় পায় যেমনি ভাবে মানুষ জিনকে ভয় পায়। কিন্তু যখন মানুষ আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য না চেয়ে জিনদের কাছে সাহায্য চায় তখন জিনেরা মানুষের ক্ষতি করার সাহস অর্জন করে।
১০। একসময় জিনেরা উর্ধ্বজগৎ তথা আসমানি ফায়সালা চুরি করে শুনতে পারত। সেগুলো তারা যাদুকরদের কাছে ১০০ টা মিথ্যে মিশিয়ে বলত। তখন যাদুকররা/জিনের পুজারিরা ভবিষ্যৎবাণি করত আর বলত, অমুক অমুক দিন অমুক অমুক ঘটনা ঘটবে বলেছিলাম তা কি সত্যি হয় নি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে এই পথ বন্ধ করে দেয়া হয়।
১১। আল্লাহর তায়ালার শক্তির সামনে জিনেরা অসহায়। জিনদের বিরুদ্ধে আল্লাহ তায়ালাই আমাদের জন্য যথেষ্ঠ।
১২। অনেকে বলে পথভ্রষ্ট ফেরেশতারা জিন/শয়তান। এই কথা ভিত্তিহীন।
১৩। খারাাপ মানুষ মারা গেলে জিন/ভূত/প্রেতাত্মা হয়ে যায়- এমন কথার কোন ইসলামী ভিত্তি নেই।
১২। অনেকে বলে পথভ্রষ্ট ফেরেশতারা জিন/শয়তান। এই কথা ভিত্তিহীন।
১৩। খারাাপ মানুষ মারা গেলে জিন/ভূত/প্রেতাত্মা হয়ে যায়- এমন কথার কোন ইসলামী ভিত্তি নেই।
তিন ধরনের জিন রয়েছেঃ
১। পাখাবিশিষ্ট, উড়তে পারা জিন
২। কুকুর ও সাপরূপি জিন (সব কুকুর ও সাপ জিন নয়)
৩। যাযাবর জিন। এরা কিছুদিন কোথাও বিশ্রাম নিলেও পরে আবার তাদের যাত্রা শুরু করে।
জিনদের ক্ষমতা
জিনের কিছু কিছু ক্ষমতা বাহ্যিকভাবে অতিপ্রাকৃত বলে মনে হলেও এই ক্ষমতা আল্লাহ তায়ালাই তাদের প্রদান করেছেন। যেমন, অতিদ্রুত একস্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করা, এক রূপ থেকে অন্যরূপ ধারণ করা, কোন মানুষ বা অন্য কোন প্রাণির উপর আসর করা। এখন প্রশ্ন হল, সব জিনেরই কি এসব ক্ষমতা রয়েছে? এই ব্যাপারে আল্লাহই ভাল জানেন। তবে অবস্থাদৃষ্টে বলা যায়, একেক ধরনের জিনের একেক রকম ক্ষমত রয়েছে।
জিনেরা কোথায় থাকে?
জিনেরা মূলত জনমানবহীন ও নোংরা স্থানে থাকে। এই কারনে টয়লেটে প্রবেশের আগে দুআ' পড়ার কথা বলা হয়েছে। নির্জন কোন স্থানে গেলে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করার কথা বলা হয়েছে। আমরা ঘরে প্রবেশের সময় যদি বিসমিল্লাহ না বলি তাহলে শয়তান আমাদের সাথে ঘরে প্রবেশ করে।
জিনেরা কি খায়?
আল্লাহর নাম নিয়ে জবেহ করা হয়েছে এমন প্রানির হাড় যখন আমরা ফেলে দেই তখন সেটা জিনের খাদ্য হিসেবে রূপান্তরিত হয়। এছাড়া খাওয়ার সময় বিসমিল্লাহ না বললে শয়তান আমাদের সাথে খাওয়া শুরু করে।
মোদ্দা কথা হল, জিনেরাও আল্লাহর বান্দা। তবে মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত, সৃষ্টির সেরা। কাজেই আমরা জিনদের চেয়ে উঁচু মর্যাদাসম্পন্ন। কাজেই জিনদের ভয় পাওয়া যাবে না। আল্লাহর শক্তির সামনে তারা কিছুই না। আমাদের আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া উচিত।