অমুসলিম হলে কি রুকইয়াহ করতে পারবে? কিভাবে করবে?

জ্বি, রুকইয়াহ সবাই করতে পারবে। মুসলিম/অমুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই এখানে। মুসলিমরা যেভাবে রুকইয়াহ করে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-অন্যরাও সেভাবেই কর...

Search This Blog

Wednesday, September 28, 2022

অমুসলিম হলে কি রুকইয়াহ করতে পারবে? কিভাবে করবে?

জ্বি, রুকইয়াহ সবাই করতে পারবে। মুসলিম/অমুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই এখানে। মুসলিমরা যেভাবে রুকইয়াহ করে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-অন্যরাও সেভাবেই করবে। তবে অমুসলিমরা স্বভাবতই কিছু বিষয়ের মুখোমুখি হবে রুকইয়াহ করতে যেয়ে। সেসব নিয়েই আজকের লেখা।

১ম বাধা- বিশ্বাসঃ স্বভাবতই মুসলিমের বিশ্বাস এবং অমুসলিমের বিশ্বাস মিলবে না। বদনজর, জ্বিন, জাদুর পিছনে শয়তানি শক্তি কাজ করে। শয়তানি শক্তির বিরুদ্ধে জয়ী হবার একমাত্র উপায় আল্লাহ তায়ালার সাহায্য চাওয়া। আল্লাহ তায়ালা কে? আল্লাহ তায়লা সেই স্বত্তা যিনি একক। তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারি। তিনি কারও থেকে জন্ম নেন নি, কাউকে জন্ম দেন নি। তার সমতূল্য কেউ নেই।
তিনি শুধু মুসলমানদের নন, বরং সবার প্রভু। তিনি সবাইকে তৈরি করেছেন, সবার রুজির ব্যবস্থা করে থাকেন। সমগ্র সৃষ্টি তারই। এসব কাজে আল্লাহর কোনো সাহায্যকারী নেই। তিনি একক, অদ্বিতীয়। মানুষকে পথ দেখাতে (শয়তানের বিভ্রান্তি থেকে বাঁচাতে) তিনি যুগে যুগে তাঁর প্রতিনিধি নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। সর্বশেষ পাঠিয়েছেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে। তিনি শুধু মুসলিমদের নবী নন, বরং সব মানুষের নবী। আল্লাহ দিয়েছেন কুরআনুল কারীম। এই কুরআন শুধু মুসলমানদের কিতাব নয়। বরং সবার জন্য। যেকেউ কুরআন থেকে উপকৃত হতে চাইবে, অবশ্যই উপকৃত হবে আল্লাহ চাইলে। যে আল্লাহ তায়ালা সবাইকে বানিয়েছেন তিনি-ই ইবাদত পাবার যোগ্য। সূর্য নয়, চন্দ্র নয়, কোনো পাথর বা কোন মূর্তি নয়। এসবের কোনো ক্ষমতা নেই। এরা না পারবে কোনো উপকার করতে না পারবে কোনো ক্ষতি করতে।
এই কথাগুলো যে যত বেশি দৃড়তার সাথে বিশ্বাস করবে সে রুকইয়াহতে তত ভাল/দ্রুত ফল পাবে ইংশাআল্লাহ।
২য় বাধা- ঘরের পরিবেশঃ সাধারণ অমুসলিমদের ঘরের পরিবেশ রুকইয়াহ "ফ্রেন্ডলি" থাকে না। ঘরে প্রানী ছবি, পুতুল, মূর্তি, প্রানীর শো পিস, গান-বাদ্য ইত্যাদি থাকে। এসব শয়তানকে আকর্ষন করে। আর শয়তান যেখানে যাবে সেখান সে তার বিষ ছড়াবে। কাজেই এধরনের সবকিছু ঘর থেকে বের করে দিবেন। বাচ্চাদের খেলনা খেলা শেষ হলে চোখের আড়ালে রাখবেন।
৩য় বাধা- পানি পড়াঃ রুকইয়াহ করতে গেলে কুরআনের আয়াত, হাদিসের দুয়া ইত্যাদি পড়ে পানি/অলিভ ওয়েল/মধু/কালোজিরা ইত্যাদিতে ফু দিতে হয়। অমুসলিমরা এটা করবে কিভাবে?
বাংলাদেশ ও কলকাতায় এটা সমস্যা হবার কথা নয়। আশেপাশে খুজলেই মসজিদ পাওয়া যাবে। মসজিদের ইমাম সাহেবকে বললেই পড়ে ফু দিয়ে দিবে। তবে তার ইচ্ছামত পড়ে ফু দিবে না। বরং রুকইয়াহর নির্দিষ্ট আয়াত/দুয়া পড়ে ফু দিবে। এই কথাটা দুঃখের সাথে লিখতে হচ্ছে যে, মসজিদের সংশ্লিষ্ট অনেক লোক আছে যারা কুফুরিতে লিপ্ত। আর ভুলেও কোনো মাজারী লোকের কাছে যাবেন না।
অনেক অমুসলিম নিজেরাই কুরআন পড়তে পারেন। তারা তাদের পানি নিজেরাই পড়ে নিবেন। যদি এমন হয়, নিজেরাও পড়তে পারেন না, অন্য কোনো মুসলমানের হেল্প নেয়াও সম্ভব না। তাহলে কিভাবে পানি রেডি করতে হবে?
এসব ক্ষেত্রে আপনি "ইয়া আল্লাহ, ইয়া রহমানুর রহীম, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার" ইত্যাদি অনেকবার পড়ে পানিতে/তেল/মধু/কালোজিরাতে ফু দিবেন। ইংশাআল্লাহ উপকারী হবে।
টিপ্সঃ
শরীরের অবাঞ্চিত লোম সব পরিষ্কার করবেন।
এরপর ভালভাবে গোসল দিবেন। গড়াগড়া করে কুলি করে, নাকের মধ্যে পানি দিয়ে, সারা গা ভিজিয়ে গোসল দিবেন।
যেকোন সময় নিরিবিলি বসে আল্লাহর কাছে দুয়া করবেন যেন তিনি আপনার সকল অসুস্থতা দূর করে দেন।
ঘরের সবার হাত পা ধোয়া পানি একটা বালতি নিয়ে নিজের গায়ে ঢালতে পারেন। এভাবে পরিবারের সবার গায়ে পানি ঢালতে পারেন। এতে নিজেদের কারনে নিজেরা ক্ষতিগ্রস্থ হলে সেটা কেটে যাবে ইংশাআল্লাহ।
অসহায়কে যথাসাধ্য সাহায্য করবেন। তাহলে ইংশাআল্লাহ আপনাকেও সাহায্য করা হবে।
আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত হবার তৌফিক দিন।
[ অমুসলিমরা পরামর্শ নিয়ে আর আপডেট জানান না। এটা উচিত না। ভাল-মন্দ জানাবেন। কৃতজ্ঞতা একটি ভাল গুণ]

No comments:

Post a Comment