রাক্বির স্বভাব-চরিত্র কেমন হওয়া উচিত বা কি কি গুনাবলি সম্পন্ন হওয়া উচিত তা বোঝার আগে রাক্বি কি বোঝা দরকার।
এককথায় যিনি রুকইয়াহ করেন তাকে রাক্বি বলে। কনিফিউশন হল? যে রুকইয়াহ করে তাকে রোগী না বলে রাক্বি কেন বলছি?
আসলে রোগি রুকইয়াহ করাতে যার কাছে যান তিনি রাক্বি। রাক্বি রোগির উপর সরাসরি কুরআনের আয়াত বা হাদিসের দুআ' পাঠ করে রুকইয়াহ করেন, বিভিন্ন ধরনের শরঈ পরামর্শ দেন। যেহেতু মাঠ পর্যায়ে রুকইয়াহ করা মানে একপ্রকার শয়তানের সাথে যুদ্ধ করা সেহেতু রাক্বির কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যের দরকার আছে যার দ্বারা তিনি আল্লাহর হুকুমে শয়তানের উপর বিজয়ি হবেন। ইনশাআল্লাহ এই গুনগুলো যাচাই-বাছাই করলে যে কেউ বুঝতে পারবেন রাক্বি কতটুকু ইসলামের উপর আছেন বা আদৌ তার থেকে কোন পরামর্শ / সেবা নিবেন কিনা।
মনে গেঁথে নেয়া উচিত, রাক্বি যদি হারাম শরীফের ঈমাম সাহেবও হন, কিন্তু আল্লাহর হুকুম নেই তাহলে রোগি রোগমুক্ত হবে না। কাজেই রাক্বির উপর নির্ভরশীল না হলে আল্লাহর উপর সম্পূর্ণ ভরষা করতে হবে।
১। বিশুদ্ধ ঈমান ও আক্বীদার উপর থাকা, প্রথম যুগের সালাফে সালেহীনগন (আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর সন্তুষ্ট হোন) যেমন ছিলেন।
২। আল্লাহ তায়ালা এক, অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান- এসব কথার উপর দৃঢ় ঈমান রাখা।
৩। কুরআনের আয়াত দ্বারা বদনজর, জিন, জাদুর চিকিৎসা করা সম্ভব - এ বিশ্বাস রাখা।
৪। জিন/শয়তানদের পরিচয়, কার্যকলাপ, কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে অন্তত প্রাথমিক ধারণা থাকা।
৫। শয়তানের চক্রান্ত সম্পর্কে সচেতন থাকা। শয়তানের/জিনের এমন কোন কথায় সম্মত না হওয়া যা ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক।
৬। আল্লাহ তায়ালার হুকুম, আহকাম মান্য করা। তিনি যেসব বিষয় নিষেধ করেছেন সেগুলো থেকে বিরত থাকা।
৭। প্রাত্যহিক ফরজ ও সুরক্ষার আমলে বিশেষ যত্নবান থাকা। সুদ, যুলুম থেকে বেচে থাকা।
৮। রুকইয়াহ করার সময় আন্তরিক হওয়া। দায়সারাভাবে রুকইয়াহ শেষ না করা।
৯। যেসব কাজ করলে শয়তান আক্রমন করতে পারবে সেগুলো থেকে বিরত থাকা। মনে রাখতে হবে নিজের সাথে থাকা শয়তানকে পরাস্থ করতে পারলেই তবে অন্যের সাথে থাকা শয়তান/জিনকে পরাস্থ করা সহজ হবে।
১০। রাক্বি বিবাহিত হলে ভাল হবে। এতে করে দুনিয়াবি অনেক ঝামেলা থেকে বেচে থাকা যাবে ইনশাআল্লাহ।
১১। রাক্বি পুরুষ হলে ভাল। কারণ পুরুষরা তুলনামূলক মেয়েদের থেকে সাহসি। তবে কোন মেয়ে যদি রাকি হতে চায় তাহলে কোন বাধা নেই।
অনেকের ধারনা রুকইয়াহ করতে গেলে আলেম না হলে হবে না, দরবেশ না হলে রুকইয়াহ করা যায় না - এইগুলো ভুল ধারনা। রুকইয়াহ বিষয়ে বেসিক জ্ঞান আছে, কুরআন তেলাওয়াত শুদ্ধ, একটু সাহসী, আর হারাম-হালাল মেনে চলেন এমন ব্যক্তিও রুকইয়াহ করতে পারবেন।
এইতো গেল রাক্বির গুণাবলির কথা, সামনের পর্বে রাকির দায়িত্ব সম্পর্কে কিছু কথা বলা হবে ইনশাআল্লাহ।