দুই ধরনের কবিরাজদের কথা জানি। প্রথম প্রকারে রয়েছেন অনেক মুফতি, মাওলানা, মসজিদের ঈমান, মাদ্রাসার শিক্ষক, খানকার গদীনসীন পীর, মাজারের খাদেমসহ অন্যধর্মের উপাসক, শিক্ষক, প্রশিক্ষক, তান্ত্রিক এবং আরও কিছু লেবারসধারী মানুষ। আমরা যারা সাধারণ মানুষ আছি তাদের মধ্যে জীবনে কখনো কোন কবিরাজের কাছে যায় নি, এমন মানুষ মনে হয় রেয়ারই হবেন।
তাদের যে নামেই ডাকা হোক না কেন, তাদের কর্মপদ্ধতি কাছাকাছি। জেনে-বুঝে হোক বা অজ্ঞতার কারণেই হোক তারা শিরকি, কুফরি কর্মকাণ্ড তথা শয়তানের পুজায় লিপ্ত। যতবড় ইসলামী টাইটেলওয়ালা হোক না কেন তারা ইসলাম থেকে বহুদূরে চলে গিয়েছে। শয়তান তাদের ধোকার মধ্যে রেখেছে, করেছে পথভ্রষ্ট। এই বিষয়ে কিছুটা বিস্তারিত এই লিংকে পাবেন। লিংকের সবলেখাগুলো না থাকলেও কিছু কিছু লেখা পাবেন ইনশাআল্লাহ।
আরেকধরনের কবিরাজ আছেন- “আল্লাহর দান হইল গাছ! যে চিনতে পারে, সে নিজেই নিজের চিকিৎসা করতে পারে ”-টাইপের। তথা ভেষজ চিকিৎসা করেন। গ্রামের বাড়িতে যাদের দাদা-দাদি বা পুরনো দিনের মানুষ আছেন তাদের কাছে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে অনেক টোটকা পাবেন। কোন পাতা, ফুল, শিকড় দিয়ে “কি করিলে কি হয়” টাইপের চিকিৎসা তাদের জানা। ট্যাবলেটের যুগ আসার পর মানুষ আর তিতা ওষুধ পছন্দ করে না। শরীরের ১২ টা বাজলেও টুক করে গিলে ফেলতে আপত্তি কম লোকই করবে।
প্রথম প্রকারের কিছু লোক আবার তাদের কুফরী কর্মকাণ্ডকে আড়াল করতে দ্বিতিয় প্রকারের কিছু তুকতাক করে থাকেন। যেন কেউ জিজ্ঞেস করলে নিরীহ মুখ করে বলতে পারেন যে, "আমিতো থানকুনি পাতার বড়ি দেই। ভেজাল কিছু করি না।"
রুকইয়াহর মেহনত আল্লাহ তায়ালার বাংলার জমিনে চালিয়েছেন খুব বেশিদিন হয় নি। আগে ১০ জন মানুষ জানলে এখন অন্তত ১০ হাজার লোক জানে যে, কুফরীর বিপরীতে কুরআনী এই মেহনতের কথা। আল্লাহ চাইলে অন্তত রুকইয়াহ শব্দটা লাখখানেক বা তারও বেশি লোক জানেন। শয়তানি শক্তি এতেই এত বিচলিত যে, কিভাবে একে নষ্ট করা যায়, পথভ্রষ্ট করা যায়, সুন্নাহ থেকে দূরে সরানো যায়- সে ব্যাপারে সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
সম্রাট আকবরের জগাখিচুরী দ্বিন-ই-ইলাহির মত রুকইয়াহ নিয়েও জগাখিচুরী হচ্ছে। সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছে কোনটা রুকইয়াহ, আর কোনটা রুকইয়াহ না। নেক সুরতে ধোকা শয়তানের অনেক বড় ষড়যন্ত্র। সবসময় স্মরণ রাখতে হবে, একজন রোগি যদি সুস্থ হয় এটা তার সাফল্য নয়। তাহলে সাফল্য কোনটা? সাফল্য হল, যদি আমি সঠিক ঈমান-আমল নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে পারি। ভেজাল ঈমান নিয়ে কবরে গেলে শুধু ভেজালই হবে, ভাল কিছু হবে না।
এই দেশে রুকইয়াহ করে এমন কেউ কেউ আছে যারা চিকিৎসা করতে গিয়ে রোগির অন্তরে ভেজাল ঢেলে দিচ্ছে। এমন সব উদ্ভট, অর্থহীন কথা বলে যার সাথে রুকইয়াহর দূরতম সম্পর্কও নেই। আল্লাহ তায়ালা যেন, অচিরেই তাদের মুখোশ উন্মোচন করে আমাদের ঈমান-আমল হেফাজত করেন। তিনিই একমাত্র হেফাজতকারী। আমীন।
নিশ্চয়ই শয়তানের চক্রান্ত মাকড়সার জালের মতই দুর্বল।