ধরেন আমি কোনো সেন্টারে বসি। আরও ধরেন, আপনার নিকট আত্মীয়া অসুস্থ আর আপনি আমার কাছে রুকইয়াহ করাতে এসেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমি বুঝতে পারলাম এখানে রুকইয়াহ করা উচিত। শুরু করার পর জ্বিন হাজির হল। কথাবার্তা চালালাম। বুঝতে পারলাম জ্বিনটা মেয়েটার উপর ইচ্ছামত অত্যাচার করে। এবার আমি ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হয়ে গেলাম।
"করছো?"
"কয়বার করছো?"
"কেমনে করছো?"
ভেবে দেখেন আপনার সামনে আপনার মা/বোন/স্ত্রী/মেয়েকে আমি এই প্রশ্নগুলো করছি। আপনার কেমন লাগবে? আমার মুখের মানচিত্র পরিবর্তন করে দিতে ইচ্ছা করছে?
স্বাভাবিক, করারই কথা।
বেশকিছুদিন আগে এই টাইপের একটা অডিও ক্লিপ হাতে আসে। এই পর্যন্ত শোনার পর আর রুচি হয় নি শোনার। শেষে কি হল জানি না।
আমাদের কিছু ভাই হয়ত রোগীনীর স্বজনদের সামনেই এসব জিজ্ঞেস করেন। হয়ত এভাবেই জিজ্ঞেস করেন। রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য জেনে, গোপন কথা জেনে, গোপন গুনাহের কথা জেনে লাভ কি বলেন দেখি? হয়ত এই গুনাহগুলো সে, শয়তান, আর আল্লাহ ছাড়া কেউ জানতো না। আপনি সেগুলো তার উপস্থিত স্বজনকে জানালেন, নিজে জানলেন, রেকর্ড করলেন এবং ৫-১০ হাত ঘুড়ে ঘুড়ে আমার হাতে আসলো। কতজন গুনাহের সাক্ষী হল? একটু ভেবে দেখবেন।
[ আর যদি রোগীর মাহরামের বা সাথে আসা মানুষের অগোচরেও করে থাকেন তাহলে বিষয়টা আরও ভয়াবহ। মাহরাম ছাড়া রোগীকে রুকইয়াহ করছেন! ]
এক শাইখের পোস্টে কমেন্ট করে এই বিষয়গুলো বলেছিলাম যে, আমাদের রাকী ভাইদের এপ্রোচের সংশোধন দরকার। কেউ কেউ এমন এমন কাজ করছেন। সেখানে একজন রুকইয়াহ শাইখ আমাকে বলে গেলেন, এসব প্রশ্ন জিনকে দুর্বল করার জন্য করা হয়। (তাহলে বোঝা গেল ঐ শাইখের মতে এটা চিকিৎসার অংশ) হয়ত শাইখের কাছে কুরআন-সুন্নাহ থেকে কোনো দলিল আছে। আল্লাহ ভাল জানেন।
আমরা হয়ত ভাবছি এভাবে কোন বিলুপ্ত সুন্নাহ জিন্দা হচ্ছে। কিন্তু ভাই চিন্তা করে দেখি এইগুলো কি আসলেই দরকার কিনা, এভাবে ছাড়াও রুকইয়াহ করা যায় কিনা।
আমরা যারা পেশেন্ট নিয়ে সেন্টারে যাই, আমাদের সচেতন হওয়া দরকার। আহমাদ রবীন ভাই পাঠিয়েছে অমুক সেন্টারে আর চোখ বন্ধ করে চলে গেলাম- এমন যেন না হয়। নিজের বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করা সিদ্ধান্ত নেই। কারও কথার উপর অন্ধভাবে আস্থা না রাখি।
আল্লাহ ভাল জানেন।