অমুসলিম হলে কি রুকইয়াহ করতে পারবে? কিভাবে করবে?

জ্বি, রুকইয়াহ সবাই করতে পারবে। মুসলিম/অমুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই এখানে। মুসলিমরা যেভাবে রুকইয়াহ করে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-অন্যরাও সেভাবেই কর...

Search This Blog

Friday, April 17, 2020

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কি করনীয়

প্রথমেই বলে নেই, আমি কোনো আলেম নই। বলতে গেলে তেমন কিছু জানিও না। কাজেই আমার এই কথাগুলো সর্বশেষ কথা না। কোনো যোগ্য ব্যক্তি যদি বলেন আমি যেভাবে বলেছি কথাগুলো সেভাবে না বরং অন্যরকম তবে তার কথাই ঠিক। আর নিম্নোক্ত পরামর্শ অবশ্যই ডাক্তারী পরামর্শের পাশাপাশি অনুসরণ করতে হবে।
১। হাদিসে এসেছে, “আল্লাহ তায়ালা যত প্রকার রোগই সৃষ্টি করেছেন, প্রত্যেক রোগেরই ঔষধ সৃষ্টি করেছেন।” কাজেই করোনাও চিকিৎসাযোগ্য রোগ। আল্লাহর হুকুমেই তা প্রতিরোধ করা সম্ভব। অতএব, এই রোগের ঔষুধের জন্য চেষ্টা ফিকির করতে হবে এবং আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইতে হবে।
২। কালোজিরা খাওয়া। হাদিসে এসেছে, “কালোজিরা একমাত্র মৃত্যু ব্যতীত সর্ব রোগের অব্যর্থ মহৌষধ।”
৩। মধু খাওয়া। হাদিসে এসেছে, তিনটি জিনিসের মধ্যে রোগ মুক্তি রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল মধু।
৩.১। অন্য একটি হাদিসে আছে, যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিনদিন ভোরে কিছু মধু চেটে খাবে, সে কোন বড় ধরনের বিপদে বা রোগে আক্রান্ত হবে না।

৪। রক্তমোক্ষন বা হিজামা। যে তিনটি জিনিসের মধ্যে রোগ মুক্তি রয়েছে তার মধ্যে আরেকটি হল রক্তমোক্ষন।
৪.১। আরেকটি হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি সতের, উনিশ ও একুশ তারিখে শিঙ্গা লাগাইবে, সে সকল রোগ হইতে নিরাময় থাকইবে। - আবু দাঊদ

নোটঃ হিজামা, শিংগা, রক্তমোক্ষন একই বিষয়। 
৫। কোরআনুল কারীম। একটি হাদিসে, কোরআনুল কারীমকে রোগ নিরাময়ের জন্য আকড়ে ধরতে বলা হয়েছে।
৭। সদকা করা। হাদিসে এসেছে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “তোমরা তোমাদের রোগীদের চিকিৎসা সদকাহ দ্বারা কর।” (আবুশ শায়খ, সহীহুল জামে ৩৩৫৮)
প্রয়োগঃ প্রতিদিন এক গ্লাস যমযমের পানিতে বা নরমাল পানিতে যমযের পানি মিশিয়ে সেখানে মধু, কালোজিরা গুলিয়ে খাওয়া যেতে পারে। যেভাবে বললাম সেভাবেই খেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আপনার যেভাবে ভাল লাগে সেভাবে খেলেও হবে ইন শা আল্লাহ। হিজামা করাতে অবশ্যই কোনো হিজামা স্পেশালিস্টের পরামর্শ নিবেন। তিনি যেটা বলেন সেটাই মানবেন।
এছাড়া বিপদাপদ, বালা-মুসিবত, রোগাক্রান্ত হলে বিভিন্ন দু’আ আছে। কয়েকটি মনে পড়ছে। যেমনঃ
১। আদম আলাইহি ওয়া সাল্লামের দু’আ (সুরা আরাফঃ ২৩)
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
২। ইউনুস আলাইহি ওয়া সাল্লামের দু’আ (সুরা আনকাবুতঃ ৮৭)
لَّا إِلَهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
৩। আইউব আলাইহি ওয়া সাল্লামের দু’আ (সুরা আম্বিয়াঃ ৮৩)
أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ

৪। জমজমের পানি পান করার পূর্বে দু'আ (উচ্চারন
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمَاً نَافِعَاًً وَرِزْقَاً وَاسِعَاًَ وَشِفَاءً مِنْ كُلِّ دَاءٍ

৫। রসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসুস্থ হলে জিবরাঈল আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে দু'আ পড়ে ঝাড়-ফুক করেছিলেন।
بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ.
এই দু'আগুলো বার পড়ে দু'হাতের তালুতে ফু দিয়ে সারা গায়ে বুলিয়ে নেয়া যেতে পারে। বাচ্চাদের কেউ অসুস্থ হতে পড়ে তাকে ফু দেয়া যেতে পারে। সারাদিনে বার বার এই আমল করা যেতে পারে।
আল্লাহ তৌফিক দিন। আমীণ।
[ সূত্রঃ ১, ২, ৩, ৪ নং হাদিসসমূহ হামিদিয়া লাইব্রেরী লিঃ থেকে প্রকাশিত বোখারী শরীফের খন্ডতে পাওয়া যাবে।
৩.১, ৪.১, ৫ হাদিস সমূহ এমদাদিয়া পুস্তাকালয় লিঃ থেকে প্রকাশিত মেশকাত শরীফের ৮ম খণ্ডে পাওয়া যাবে। ]