ইস্তেহাযা এই পোস্টের আলোচ্য বিষয় নয়। যারা জানেন না ইস্তিহাযা কি তারা জেনে নিবেন।
হায়েজ (পিরিয়ড) এবং নেফাস (সন্তান জন্ম দেবার পর যে রক্তস্রাব হয়) অবস্থায় মেয়েদের সালাত, সাওম আল্লাহ মাফ করেছেন। সালাত একেবারে মাফ হলেও, সাওম পরে আদায় করতে হয়।
এই নিষেধাজ্ঞার চক্করে পড়ে অনেকেই এই অবস্থায় একদম গাফেল হয়ে যান। হয়ত মনে করে মুখ দিয়ে "আল্লাহ" শব্দটাও এই অবস্থায় বের করা যাবে না। অলসতার কারনেই হোক বা অজ্ঞতার কারণেই হোক অনেকেই এই সময় আমলে দুর্বল হয়ে যান, করেন না বা করতে চান না। কিন্তু এটা আদৌ উচিত নয়।
পিরিয়ড হোক বা নেফাস অবস্থায় থাকেন, আপনাদের উচিত হবে আল্লাহর যিকর, দুয়া, দরূদ, ইস্তেগফার এবং কুরআনের যেসমস্ত আয়াত হেফাজতের আমল হিসেবে বা দুয়া হিসেবে পড়ার অনুমতি আছে সেগুলো পড়া। এই প্রসংগে একটি ফতোয়া দিচ্ছি।
"পিরিয়ডে এমন সব আয়াত পড়া যাবে যেসব দোয়ার অর্থ প্রকাশ করে। অথবা আল্লাহর জিকির, প্রশংসা, বড়ত্ব বুঝায়। এ অবস্থায় এমন কোন আয়াত পড়া যাবেনা যা দ্বারা আল্লাহর নির্দেশ এবং নিষেধাজ্ঞা, পূর্বের অথবা ভবিষ্যতের কোন ঘটনা অথবা ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য বুঝায়। মোটকথা, এ অবস্থায় সাধারণ তেলাওয়াতের উদ্দেশ্যে কোরআন পড়া যাবেনা।
উল্লেখিত মূলনীতি অনুসারে, আপনি যদি নিয়ত রাখেন আল্লাহর প্রশংসাপূর্ণ আয়াতের মাধ্যমে জিন এবং শয়তানের ক্ষতি থেকে সুরক্ষার জন্য পিরিয়ডের সময় ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি, তিনকুল (সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়বেন, তাহলে দোয়া হিসেবে এটা পড়া যাবে। তবে আপনি সুরা কাফিরুন পড়তে পারবেন না কারণ এটা উপরের উল্লেখিত শর্ত পূরণ করে না।
আল্লাহ তা’আলাই ভালো জানেন।
দারুল ইফতা
দারুল উলুম দেওবন্দ
(Fatwa: 212/227/N=1433)"
তাহলে বোঝা গেল, কুরআনুল কারীমে যেসব দুয়ার আয়াত আছে, যেসব আয়াতে আল্লাহর বড়ত্ব, প্রশংসা, জিকির ইত্যাদি আয়াত আপনি নিজের সুরক্ষার জন্য, শয়তান থেকে হেফাজতের জন্য পড়তে পারবেন।
কেউ কেউ একধাপ এগিয়ে গিয়ে এই কথাও বলেন, পিরিয়ড/নেফাসের সময়টাতে মেয়েরা প্রতি সালাতের ওয়াক্তে কিছু না কিছু জিকির, দুয়া করবে, গাফেল হবে না। [ এটা বাধ্যতামূলক না, গুরুত্ব বোঝানোর জন্য লিখলাম ]
আর নিজেকে সব ধরনের ক্ষতি থেকে হেফাজতে রাখতে এই আমলগুলো খুবই জরুরী।
আল্লাহ তায়ালা সহজ করে দিন, কবুল করে নিন। তৌফিক দান করুন। আমীন।