অমুসলিম হলে কি রুকইয়াহ করতে পারবে? কিভাবে করবে?

জ্বি, রুকইয়াহ সবাই করতে পারবে। মুসলিম/অমুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই এখানে। মুসলিমরা যেভাবে রুকইয়াহ করে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-অন্যরাও সেভাবেই কর...

Search This Blog

Sunday, April 14, 2019

অভিযোগ সিরিজ (সবই রুকইয়াহ হলে ডাক্তারের কি দরকার?)

কথা শুনে মনেহয় আমরা ডাক্তারের ভাত মেরে দিচ্ছি! হা হা!

আদতে কিন্তু মোটেও তা নয়। ডাক্তারি চিকিৎসা ডাক্তারি চিকিৎসার জায়গায়, রুকইয়াহ রুকইয়াহর জায়গায়। কেউ হাত কেটে গেলে, হাত পা ভেঙ্গে গেলে, অসুখ হলে তো অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাবেন। কেউ তো নিষেধ করেনি। বরং আমরা প্রায়ই জিজ্ঞেস করি ডাক্তার দেখিয়েছেন কিনা, ডাক্তার কি বলেছে?

সবই যেমন রুকইয়াহ কেস না, তেমনি সবকিছুই ডাক্তারী কেসও না। মেয়েদের পিরিয়ডিক প্রবলেম নিয়ে যাদের সাথে কথা বলার সুযোগ হয়েছে তাদের কাছে একটা কমন কথা শুনেছি। ডাক্তার বলেছে, "বিয়ে হলে ঠিক হয়ে যাবে।" বালেগ হবার পর থেকে বিয়ে হতে ৮-১০ বছর বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে। ঔষুধ খেতে থাকবে আর বিয়ের অপেক্ষা করবে? এই সমাধান চিকিৎসা বিজ্ঞানে?

কিন্তু রুকইয়াহর ক্ষেত্রে এই সীমাবদ্ধতা নেই। যেমন, হাত কেটে গেল, ডাক্তার সেলাই দিল, ব্যথা করে। ব্যথার রুকইয়াহ করেন। সাধারন অসুস্থতার রুকইয়াহ করেন। অসুবিধারতো কিছু নেই। রুকইয়াহর কোন সাইড ইফেক্ট নেই, কোন ক্ষতিও নেই।

রুকইয়াহ দুআ' বা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবার একটি প্রকরণ। তো, আল্লাহর কাছে সাহায্যতো যেকোন সময়ই চাওয়া যায়, যেকোন সমস্যার জন্যই চাওয়া যায়। কুরআন-সুন্নাহকে যদি সকল কিছু সমাধান মেনে নেই তাহলে ডাক্তারী চিকিৎসার পাশাপাশি রুকইয়াহ করতে প্রবলেম কোথায়? কেউ যখন কোন সমস্যার কথা বলে তখন আমরা ট্রাই করি এর পিছনে "বদনজর, জ্বিন, যাদু" সংক্রান্ত কোন কারন আছে কিনা? আগেই বলে দেই না, অমুক ডাক্তারের কাছে যান, তমুক ডাক্তারের কাছে যান। কারন যদি রুকইয়াহ রিলেটেড প্রবলেম হয় সারা দুনিয়ার ডাক্তার ঘুড়লেও লাভ হবে না। সমস্যা মিটবে না। আল্লাহর কালাম দিয়ে চিকিৎসা করা লাগবে।

সমস্যা রুকইয়াহর হলে রুকইয়াহ করলে ডাক্তারীর খরচটা আর লাগল না। আর সমস্যা ডাক্তারীর হলে ডাক্তারীর পাশাপাশি রুকইয়াহ করতে পারে। রুকইয়াহতো ফ্রী, কোন খরচ নেই। নিজেরটা নিজেই করা যায়। কাউকে অনুরোধেরও দরকার নেই। এটাইতো সবচে' উত্তম, নিজের রুকইয়াহ নিজেই করা।

ডাক্তাররা যদি রুকইয়াহ নিয়ে পড়াশুনা করেন, ডাক্তারীর পেশেন্ট আর রুকইয়াহর পেশেন্ট আলাদা করতে পারেন তাহলে সমাজের উপকার বই ক্ষতি হবে না। অনর্থক অর্থ ব্যয় থেকে সমাজের মানুষ মুক্তি পাবে। এখন প্রশ্ন হল কিভাবে বুঝব কোনটা রুকইয়াহ কেস আর কোনটা ডাক্তারী কেস? বোঝার উপায় একটাই রুকইয়াহ করা(তেলাওয়াত করা/শোনা) । যদি ডাক্তারী সমস্যা হয় তাহলে তেলাওয়াত করলে/শুনলে কোন অড ফিলিং হবে না। আর যদি রুকইয়াহর সমস্যা হয় তাহলে অড ফিলিং যেমন ঘুম পাওয়া, বমি ভাব, শুনতে না চাওয়া, বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা, অস্বস্থি ইত্যাদি হতে পারে। অনেক সময় রুকইয়াহ পেশেন্টের ভুগতে ভুগতে ডাক্তারী ক্ষতি হয় তখন অবশ্যই একজন বিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

পরিশেষ বলব, রুকইয়াহ এবং ডাক্তারী চিকিৎসা পরস্পর বিরোধী না। বরং রুকইয়াহ ও ডাক্তারী চিকিৎসা একসাথে করাই সুন্নাহ।