ঝাড়ফুঁকের সাধারন বা প্রসিদ্ধ যেসব আয়াত রয়েছে সেগুলোর বাংলা অর্থ টুকে দিলাম মতিউর রহমান খান অনূদিত "শব্দার্থে আল কুরআনুল মজীদ"দের বিভিন্ন খণ্ড থেকে। ইনশাআল্লাহ অর্থের দিকে লক্ষ্য রেখে পড়তে পারলে অধিক উপকার পাওয়া যাবে।
সুরা ফাতিহা
১। সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহতা'আলারই জন্যে যিনি সারাজাহানের রব।
২। যিনি দয়ামত মেহেরবান।
৩। বিচার দিনের মালিক।
৪। আমরা তোমারই এবাদত করি এবং তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থণা করি।
৫। আমাদের সঠিক-দৃঢ়পথ প্রদর্শণ কর।
৬। ঐসব লোকের পথ যাদেরকে তুমি পুরস্কৃত করেছ।
সুরা বাকারা
আয়াত ১ থেকে ৫ , ১০২, ১৬৩, ১৬৪, ২৫৫, ২৮৫, ২৮৬।
১। আলীফ লা-ম মী-ম
২। ইহাঁ আল্লাহতা'আলার কিতাব, ইহাতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। ইহা জীবন-যাপনের ব্যবস্থা, সেই মুত্তাকী'দের জন্যে।
৩। যারা গায়েবে(অদৃশ্যকে) বিশ্বাস করে, নামায কায়েম করে, আমরা তাদেরকে যে রেযেক দিয়েছি তা হতে ব্যয় করে।
৪। যে কিতাব তোমার প্রতি নাযেল করা হয়েছে (অর্থাৎ কুরআন) এবং তোমার পূর্বে যেসব গ্রন্থ অবতীর্ণ হয়েছে, সে সবকেই বিশ্বাস করে এবং পরকালের প্রতি যাদের দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে।
৫। বস্তুতঃ এই ধরনের লোকেরাই তাদের খোদার নিকট হতে অবতীর্ণ জীবন-ব্যবস্থার অনুসারী এবং তারাই কল্যান পাওয়ার অধিকারী।
১০২। অথচ সে সব জিনিসকে তারা মানতে শুরু করল, শয়তান যা সোলাইমানের রাজত্বের নাম নিয়ে পেশ করছিল। প্রকৃতপক্ষে সোলাইমান কখনই কুফরী অবলম্বণ করেন নি। কুফরী অবলম্বন করেছে সেই শয়তানরা যারা লোকদেরকে যাদুগিরি শিক্ষাদান করছিল। বেবিলনের হারুত ও মারুত দুই ফিরেশতার প্রতি যা কিছু নাযিল করা হয়েছিল তারা তার প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিল। অথচ তারা (ফিরেশতারা) যখনি কাউকে এ জিনিসের শিক্ষা দিত, তখন প্রথমেই একথা বলে স্পষ্টভাষায় হুশিয়ার করে দিতে যে, 'দেখ, আমরা নিছক একটি পরীক্ষামাত্র, তোমরা কুফরীর পংকে নিমজ্জিত হয়োনা। তা সত্ত্বেও তারা ফিরেশতাদ্বয়ের নিকট হতে সেই জিনিসই শিখতেছিল, যা দিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করা যায়। অথচ একথা সুস্পষ্ট যে, খোদার অনুমিত ব্যতিরেকে এ উপায়ে তারা কারো কোন ক্ষতি সাধরন করতে সমর্থ হত না। কিন্তু এ সত্বেও তারা এমন জিনিস শিকত যা তাদের পক্ষে কল্যানকর ছিল না বরং ক্ষতিকর ছিল; এবং তারা ভাল করেই জানত যে এ জিনিসের খরিদ্দার হলে তাদের জন্য পরকালের কোনই কল্যান নেই। তারা যে জিনিসের বিনিময়ে নিজেদের জীবন বিক্রি করেছে, তা কতই নিকৃষ্ট জিনিস। হায়! এ কথা তারা যদি জানতে পারত!
১৬৩। তোমাদের খোদা এক ও একক, মেহেরবান ও দয়ালু খোদা ভিন্ন (বিশ্ব ভুবনে) আর কোন খোদা নেই।
১৬৪। (এ সত্য অনুধাবন করার অন্য কোন নিদর্শনের প্রয়োজন হলে) যাদের সুস্থ বিবেক-বুদ্ধি রয়েছে তাদের জন্যে আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে, রাত-দিনের আবর্তনে, মানুষের জন্যে উপকারী দ্রব্যাদি নিয়ে নদী ও সমুদ্রে ভাসমান চলমান নৌকা সমূহে, উপর হতে বর্ষিত বৃষ্টির ধারায় ও তার সাহায্যে পৃথিবীতে সকল প্রকার প্রাণশীল সৃষ্টির বিস্তার সাধনে, বায়ুর প্রবাহে, আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানে নিয়ন্ত্রিত মেঘমালায় অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে।
২৫৫। আল্লাহ সেই চিরঞ্জীব শাশ্বত সত্তা, যিনি সমগ্র বিশ্ব চরাচরকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে আছেন, যিনি ছাড়া আর কোন খোদা নেই, তিনি না নিদ্রা যান, না তন্দ্রা তাকে স্পর্শ করে। আকাশ মন্ডল ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব তাঁরই। কে এমন আছে যে তাঁর দরবারে তাঁর অনুমতি ব্যতীত সুপারিশ করতে পারে? যা কিছু বান্দাদের (লোকদের) সম্মুখে রয়েছে তাও তিনি জানেন; আর যা কিছু তার অগোচরে সে সম্বন্ধেও তিনি ওয়াকিফহাল। তাঁর জ্ঞাত বিষয় সমূহের মধ্যে হতে কোন জিনিসই তাদের (লোকদের জ্ঞান-সীমার) আয়ত্বাধীন হতে পারেন না। অবশ্য কোন বিষয়ের জ্ঞান তিনি নিজেই যদি কাউকে জানাতে চান (তবে অন্য কথা)। তার সাম্রাজ্য সমগ্র আকাশমন্ডল ও পৃথিবীকে পরিবেষ্টন করে আছে। ঐ সবের রক্ষণাবেক্ষণ এমন কোন কাজ নয় যা তাঁকে ক্লান্ত করে দিতে পারে। বস্তুতঃ তিনিই এক মহান ও শ্রেষ্ঠতম সত্তা।
২৮৫। রসূল সে হেদায়াত (পথ-নির্দেশ)-কেই বিশ্বাস করেছে যা তার পরোয়ারদিগারের নিকট হতে তার প্রতি নাযিল হয়েছে। আর যারা এই রসূলের প্রতি বিশ্বাস করেছে তারাও সে হেদায়াতকে মন দিয়ে মেনে নিয়েছে। এরা সকলেই আল্লাহ, ফিরেশতা, তাঁর কিতাব এবং তাঁর রসূলদের বিশ্বাস করে ও মানে এবং তাদের কথা এইঃ আমরা খোদার রসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করিনা। আমরা নির্দেশ শুনেছি এবং বাস্তব ক্ষেত্রে মেনে নিয়েছি। 'হে খোদা' আমরা তোমার নিকট গুনাফ মাফের জন্যে প্রার্থনা করি, আমাদেরকে তোমাদের দিকেই ফিরে যেতে হবে।
২৮৬। আল্লাহ কোন প্রাণীর উপরই তার শক্তি-সামর্থের অধিক দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না। প্রত্যেক ব্যক্তিই যে পূণ্য অর্জন করেছে তার প্রতিফল তারই জন্যে, আর যা কিছু পাপ সঞ্চয় করেছে তার খারাপ ফল তার উপর পড়বে। (ঈমানদারেরা! তোমারা এভাবে দোয়া কর)" হে আমাদের খোদা, ভুল ভ্রান্তি বশতঃ আমাদের যা কিছু ত্রুটি হয় তার জন্য আমাদেরকে শাস্তি দিওনা। হে খোদা, আমাদের উপর সে ধরনের বোঝা চাপিয়ে দিওনা যে রূপ পূর্বগামী লোকদের উপর চাপিয়ে দিয়েছিলে। হে খোদা, যে বোঝা বহন করার শক্তি-ক্ষমতা আমাদের নেই তা আমাদের উপর চাপায়োনা, আমাদের প্রতি উদারতা দেখাও, আমাদের অপরাধ ক্ষমা কর, আমাদের প্রতি রহমত নাযিল কর, তুমিই আমাদের মাওলা, আশ্রয়দাতা; কাফেরদের প্রতিকূলে তুমি আমাদেরকে সাহায্য দান কর।"
সুরা আলে ইমরান
আয়াত ১৮, ১৯
১৮। আল্লাহ নিজেই একথার সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তিনি ছাড়া আর কোন খোদা নেই, ফিরেশতা এবং সব জ্ঞানবান লোকেরাও সততা ও ইনসাফের সাথে এ সাক্ষ্য দিতেছে যে, প্রকৃতপক্ষে সেই মহাপরাক্রমশালী ও বিজ্ঞানী ছাড়া আর কেউই খোদা হতে পারে না।
১৯। আল্লাহর নিকট জীবন-ব্যবস্থা হচ্ছে কেবলমাত্র ইসলাম। এ জীবন-ব্যবস্থা হতে বিচ্যুত হয়েছে সেসব লোকেরা যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল, যে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছে, তাদের এই কর্মনীতির একমাত্র কারণ এ হতে পারে যে, প্রকৃত জ্ঞান পাওয়ার পর তারা পরস্পরের উপর প্রাধান্য বিস্তারের জন্যই এরূপ করেছে। বস্তুতঃ আল্লাহর আদেশ-নিষেধ ও হেদায়াত মেনে নিতে যে অস্বীকার করবে তার নিকত হতে হিসাব গ্রহণ করতে খোদার বিন্দুমাত্র বিলম্ব হয় না।
সুরা আল-আ'রাফ
আয়াত ৫৪, ৫৫, ৫৬, ১১৭,১১৮, ১১৯, ১২০, ১২১, ১২২
৫৪। বস্তুতঃ তোমাদের রব সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর স্বীয় সিংহাসনের উপর আসীন হন। যিনি রাতকে দিনের উপর বিস্তার করে দেন। তারপরে দিন রাতের পিছনে দৌড়াতে থাকে। যিনি সূর্য চন্দ্র ও তারকাসমূহ সৃষ্টি করেছেন। সব সৃষ্টিই তাঁর এবং সার্বভৌমত্বও তাঁরই। অপরিসীম বরকতময় আল্লাহ, সমগ্র জাহানের মালিক ও লালন-পালনকারী।
৫৫। তোমাদের রবকে ডাক, কাঁদকাঁদ কন্ঠে ও চুপে-চুপে। নিশ্চিতই তিনি সীমা লঙ্ঘঙ্কারীদের পছন্দ করেন না।
৫৬। যমীন বিপর্যয় সৃষ্টি করো না, তার সংশোধন ও স্থিতি বিধানের পর। এবং আল্লাহকেই ডাঁক, ভয়ের সাথে এবং আশান্বিত হয়ে। নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের অতি নিকটে।
১১৭। আমরা মুসাকে বললামঃ "তোমার লাঠি নিক্ষেপ কর"। তা নিক্ষিপ্ত হয়ে সহসা তাদের এই মিথ্যা তেলেসমাতিকে গিলে ফেলতে লাগল।
১১৮। এভাবে যা হক ছিল তাই হক প্রমাণিত হল। আর তারা যা কিছু বানিয়ে রাখছিল তা সবই বাতিল হয়ে গেল।
১১৯। ফিরাঊন এবং তার সংগীরা মুকাবিলার ময়দানে পরাজিত হল এবং বিজয়ী হবার পরিবর্তে লাঞ্ছিত হল।
১২০। যাদুকরদের অবস্থা এই হল যে, কোন কিছু যেন ভিতর হতেই তাদের মাথাকে সিজদায় নুয়ে দিল
১২১। বলতে লাগলঃ "আমরা রব্বুল আলামীনের প্রতি ঈমান আনলাম
১২২। যাকে মুসা ও হারূন উভয়েই মানে
সূরা ইউনুস
আয়াত ৮১, ৮২
৮১। পরে যখন তারা নিজদের যাদু নিক্ষেপ করল, তখন মূসা বললঃ তোমরা যা কিছু নিক্ষেপ করেছ, তা যাদু। আল্লাহ এখনই তা ব্যর্থ করে দেবেন। ফাসাদকারী লোকদের কাজকে আল্লাহ শুদ্ধ হতে দেন না।
৮২। আল্লাহ তাঁর ফরমান দ্বারা হক-কে হক করে দেখিয়ে থাকেন, অপরাধী লোকদের পক্ষে তা যতই দুঃসহ হোক না কেন।
সূরা ত্বাহা
আয়াত ৬৯
৬৯। নিক্ষেপ কর যা তোমার হাতে আছে। তা এখনই এদের কৃত্রিম জিনিষগুলিকে গিলে ফেলবে। এরা যা কিছু বানিয়ে এনেছে, এতো যাদুকরের প্রতারণা। আর যাদুকর কখনও সফল হতে পারেন না - যত জাঁক-জমক করেই আসুক না কেন।
সূরা আল-মু"মেনুন
আয়াত ১১৫, ১১৬, ১১৭, ১১৮
১১৫। তোমরা কি বুঝে নিয়েছিলে যে, আমরা তোমাদেরকে অকারনেই পয়দা করেছি, আর তোমাদেরকে কখনো আমাদের দিকে ফিরে আসতে হবে না
১১৬। অতএব মহান শ্রেষ্ঠ আল্লাহ, প্রকৃত বাদশাহ! তিনি ছাড়া কেউ ইলাহ নেই, মর্যাদাবান আরশের মালিক!
১১৭। যে কেউ আল্লাহর সাথে অপর কোন মাবুদকে ডাকবে - যার সমার্থনে তার নিকট কোনই দলীল নেই তার হিসাব আল্লাহর নিকট রয়েছে। এই ধরনের কাফেররা কখনো কল্যাণ লাভ করতে পারেনা।
১১৮। হে নবী বল "আমার রব। মাফ কর, দয়া কর, তুমি সব দয়াবান হতেও অতি উত্তম দয়াবান।"
সূরা আস্-সাফফাত
আয়াত ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০
১। কাতারের পর কাতার বেধে যারা সারিবদ্ধ হয় তাদের শপথ!
২। তাদের শপথ যারা ধমক ও শাসনবানী শুনায়
৩। তাদেরও শপথ যারা উপদেশবানী শুনিয়ে থাকে
৪। তোমাদের প্রকৃত মা'বুদ শুধু একজনই মাত্র-
৫। যিনি যমীন ও আসমানসমূহের এবং আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী সব জিনিসেরই মালিক, মালিক সব উদয় দিগন্তের
৬। আমরা দুনিয়ার আসমানকে তারকার চাকচিক্যে উদ্ভাসিত করেছি।
৭। এবং প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান হতে উহাকে সুরক্ষিত করে দিয়েছি।
৮-৯। এই শয়তানগুলি উচ্চতর জগতের কথাবার্তা শুনবে পারে না। চারিদিক হতে বিতাড়িত ও বহিষ্কৃত করা হচ্ছে। আর তাদের জন্য অবিরাম আযাব রয়েছে।
১০। তা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে যদি কেউ কিছু হাত করতে পারে তাহলে একটি তেজস্বী অগ্নিস্ফুলিংগ তার পশ্চাদ্ধাবন করে।
সূরা আল-আহকাফ
আয়াত ২৯, ৩০, ৩১, ৩২
২৯। (সেই ঘটনাও উল্লেখ্য) যখন আমরা জ্বিনদের একটি গোষ্ঠিকে তোমারদিকে ঘুরিয়ে এনেছিলাম, যেন তারা কুরআন শুনতে পায়। তারা যখন সেই স্থানে উপস্থিত হল (যেখানে তুমি কুরআন পাঠ করছিলে) তখন তারা পরস্পর বলল, 'চুপ হয়ে থাক'। পরে তা যখন পড়া হয়ে গেল, তখন তারা সাবধানকারী হয়ে নিজেদের জাতির নিকট ফিরে গেল।
৩০। তারা ফিরে গিয়ে বললঃ 'হে আমার জাতির লোকেরা। আমরা এমন কিতাব শুনেছি যা মুসার পরে নাযিল করা হয়েছে; তা নিজের পূর্বে আসা কিতাব সমুহের সত্যতা বিধানকারী। তা পরিচালিত করে সত্য, সঠিক ও নির্ভুল পথের দিকে।
৩১। হে আমাদের জাতির লোকেরা! আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর দাওয়াত গ্রহণ করে নাও এবং তার প্রতি ঈমান আন। আল্লাহ তোমাদের গুনাহ-খাতা ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে উৎপীড়ক আযাব হতে রক্ষা করবেন'।
৩২। আর যে লোক আল্লাহর আহ্বাঙ্কারীর কথা মেনে নেয় না, সে না পৃথিবীতে নিজে এমন কোণ শক্তি-ক্ষমতার অধিকারী যা আল্লাহকে হারায়ে দিতে সক্ষম, আর না তার এমন কোন বন্ধু-পৃষ্ঠপোষক আছে, যে আল্লাহ হতে তাকে রক্ষা করবে। এই শ্রেণীর লোকেরা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে পড়ে গেছে।
সুরা আর্-রহমান
আয়াত ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬
৩৩। হে জ্বিন ও মানুষের দল! তোমরা যদি পৃথিবী ও নভোমন্ডলের সীমানা লংঘন করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হও, তবে পালিয়ে দেখ-না, পালিয়ে যেতে পার না, সে জন্যে তো খুব বেশি শক্তি-সামর্থ্যের প্রয়োজন।
৩৪। তোমাদের খোদার কোন্ কোন্ শক্তি-ক্ষমতাকে তোমরা অস্বীকার করবে?
৩৫। (পালিয়ে যেতে চেষ্টা করলে) তোমাদের উপর আগুনের শিখা ও ধুঁয়া ছড়ে দেয়া হবে, তোমরা যার মুকাবেলা করতে পারবে না।
৩৬। হে জ্বিন ও মানুষ! তোমরা তোমাদের খোদার কোন্ কোন্ শক্তি--ক্ষমতাকে অসত্য মনে করে অস্বীকার করবে?
সূরা হাশর
আয়াত ২১, ২২, ২৩, ২৪
২১। আমরা যদি এই কুরআন কোন পাহাড়ের উপরও অবতীর্ণ করিয়া দিতাম তাহা হইলে তুমি দেখিতে যে, উহা আল্লাহর ভয়ে ধ্বসিয়া যাইতেছে ও দীর্ণ-বিদীর্ণ হইতেছে। এই দৃষ্টান্তগুলি আমরা লোকদের সম্মুখে এই উদ্দেশ্যে পেশ করিতেছি যে, তাহারা (নিজেদের অবস্থা সম্পর্কে) চিন্তা-বিবেচনা করিবে।
২২। তিনি আল্লাহই, তাঁহার ছাড়া কোন মা'বুদ নাই। গোপন ও প্রকাশ্য সব কিছুই তিনি জানেন। তিনিই রহমান ও রহীম।
২৩। তিনি আল্লাহ, যিনি ছাড়া কোন মা'বুদ নাই। তিনি মালিক-বাদশা। অতীব মহান পবিত্র। পুরাপুরি শান্তি-নিরাপত্তা। শান্তি-নিরাপত্তা দাতা, সংরক্ষক, সর্বজয়ী, নিজের নির্দেশ-বিধান শক্তি প্রয়োগে কার্যকরকারী এবং স্বয়ং বড়ত্ব গ্রহণকারী। আল্লাহ্ পবিত্র মহান সেই শিরক হইতে যারা লোকেরা করিতেছে।
২৪। তিনি আল্লাহই, যিনি সৃষ্টি-পরিকল্পনা রচনাকারী ও উহার বাস্তবায়নকারী এবং সেই অনুযায়ী আকার-আকৃতি রচনাকারী। তাঁহার জন্য অতীব উত্তম নামসমূহ বিদ্যমান। আসমান-যমীনের প্রত্যেকটি জিনিস তাঁহার তসবীহ করে। আর তিনি অতীব প্রবল মহা পরাক্রান্ত এবং সুবিজ্ঞ-বিজ্ঞানী।
সূরা জিন
আয়াত ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯
১। হে নবীঃ বল, আমার প্রতি অহী করা হইয়াছে যে, জ্বিনদের একটী দল মনোযোগ সহকারে শুনিয়াছে, (পরে নিজেদের এলাকায় গিয়ে নিজেদের জাতির লোকদের নিকট) বলিয়াছে, আমরা এক অতীব আশ্চর্যজনক কুরআন শুনিয়াছি,
২। যাহা সত্য-সঠিক নির্ভুল পথ প্রদর্শন করে। এই জন্য আমরা উহার প্রতি ঈমান আনিয়াছি। অতঃপর আমরা আর কক্ষণই আমাদের খোদার সহিত কাহাকেও শরীক করিব না।
৩। আরও এই যে, আমাদের খোদার মান-মর্যাদা-সম্ভ্রম অতীব উচ্চ মহান। তিনি কাহাকেও স্ত্রী বা পুত্র-সন্তানরূপে গ্রহণ করেন নাই
৪। আরও এই যে, আমাদের মধ্যকার নির্বোধ-মূর্খ লোকেরা আল্লাহ সম্পর্কে অনেক কিছু অসত্য কথা-বার্তা বলিতেছিল।
৫।' আরও এই যে, আমরা মনে করিয়াছিলাম যে, মানুষ ও জ্বিন আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলিতে পারে না।'
৬। 'আরও এই যে, মানুষের মধ্য হইতে কিছু সংখ্যক লোক কিছু সংখ্যক জ্বিনের নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করিতেছিল। এইসব করিয়া তাহাদের জ্বিনদের অহংকার ও অহমিকতা আরও অধিক বৃদ্ধি করিয়া দিয়াছে।'
৭।'আরও এই যে, তোমরা যেমন ধারণা করিতেছিলে মানুষেরাও তেমনি ধারণা পোষণ করিতেছিল যে, আল্লাহ্ কাহাকেও রসূল বানাইয়া পাঠাইবেন না।'
৮। 'আরও এই যে, আমরা আকাশমন্ডল আঁতিপাঁতি করিয়া খুঁজিয়াছি। ফলে দেখিয়াছি যে, উহা পাহারাদারদের দ্বারা পরিবেস্টিত হইয়া আছে এবং জোতিষ্কমন্ডলির বর্ষণ হইতেছে।
৯। 'আরও এই যে, পূর্বে আমরা কোন কিছু শুনিতে পাওয়ার উদ্দেশ্য আকাশমন্ডলে আসন গ্রহণ করার স্থান পাইয়া যাইতাম। কিন্তু এক্ষণে যে-ই লুকাইয়া গোপনে কিছু শুনিতে চেষ্টা করে সে নিজের জন্য ঘাঁটিতে একটি জ্যোতিষ্ক নিয়োজিত ও প্রস্তুত পায়।'
সুরা ইখলাস
১। বল তিনি আল্লাহ একক
২। আল্লাহ সবকিছু হতে নিরপেক্ষ মুখাপেক্ষীহীন-সবই তার মুখাপেক্ষী
৩। না তাঁর কোন সন্তান আছে, আর না তিনি কারো সন্তান
৪। এবং কেউই তাঁর সমতুল্য নয়
সূরা আল্-ফালাক
১-২ বল আমি আশ্রয় চাই সকাল বেলার স্রষ্টা রবের নিকট সে সব প্রত্যেক জিনিসের অনিষ্ট থেকে যা তিনি সৃষ্টি করেছেন।
৩। আর রাত্রির অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা আচ্ছন্ন হয়ে যায়
৪। এবং গিরায় ফুঁক দানকারী (বা ফুঁক দানকারিনী)'র অনিষ্ট থেকে
৫। ও হিংসুকের অনিষ্ট থেকে - যখন সে হিংসা করে
সূরা আন্-নাস
১-ত। বল, আমি পানাহ চাই মানুষের রব, মানুষের বাদশাহ, মানুষের প্রকৃত মা'বুদের নিকট
৪। বার বার ফিরিয়ে আসা অস্অসা উদ্রেককারীর অনিষ্ট থেকে
৫-৬। যে লোকের দিলে অস্অসার উদ্রেক করে, সে জ্বিনের মধ্য হতে হোক, কি মানুষের মধ্য হতে।
সাথে থাকা বদনজরের জন্য পঠিতব্য আয়াত
সূরা আল-কাহাফ
আয়াত ৩৯
৩৯। আর তুমি বাগানে প্রবেশ করেছিলে তখন তোমার মুখ হতে এ কথা বের হল না কেন যে, আল্লাহ যা চেয়েছেন তা হয়েছে। আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোন শক্তি নেই। যদি তুমি আমাকে ধন-বল ও লোক-বলে তোমার অপেক্ষা ছোট দেখতে পাও।
সূরা কালাম
আয়াত ৫১, ৫২
৫১। এই কাফের লোকেরা যখন উপদেশের কালাম (কুরআন) শ্রবণ করে, তখন তাহারা তোমাকে এমন দৃষ্টিতে দেখে, যেন মনে হয়, তাহারা তোমার মূলোৎপাটন করিয়া ছাড়িবে। আর বলে যে, এই লোকটি নিশ্চয়ই পাগল!
৫২। অথচ ইহাতো সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি মহান উপদেশ মাত্র।
সাথে থাকা যাদুর সমস্যার জন্য পঠিতব্য আয়াত
সূরা তাগাবুন
আয়াত ১৪, ১৫, ১৬
১৪। হে ঈমানদার লোকেরা, তোমাদের স্ত্রীগণ ও তোমাদের সন্তান-সন্তুতিদের মধ্যে কতিপয় তোমাদের শত্রু। তাহাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকিবে। আর তোমরা যদি ক্ষমা ও সহনশীলতার ব্যবহার কর ও ক্ষমা করিয়া দাও, তাহা হইলে আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল ও নিরতিশয় দয়াবান।
১৫। তোমাদের ধন মাল ও তোমাদের সন্তান-সন্ততি তো একটা পরীক্ষা বিশেষ। আর আল্লাহই এমন সত্তা, যাহার নিকট বড় প্রতিফল রহিয়াছে।
১৬। কাজেই তোমাদের মধ্যে যতটা সম্ভব হয় আল্লাহকে ভয় করিতে থাক। আর শুন ও অনুসরণ কর এবং নিজের ধন-মাল ব্যয় কর, ইহা তোমাদের জন্যই কল্যাণকর। যে লোক স্বীয় মনের সংকীর্ণতা হইতে রক্ষা পাইয়া গেল, শুধু সে-ই কল্যাণ ও সাফল্য-প্রাপ্ত হইবে।