অমুসলিম হলে কি রুকইয়াহ করতে পারবে? কিভাবে করবে?

জ্বি, রুকইয়াহ সবাই করতে পারবে। মুসলিম/অমুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই এখানে। মুসলিমরা যেভাবে রুকইয়াহ করে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-অন্যরাও সেভাবেই কর...

Search This Blog

Wednesday, December 30, 2020

একটি ভুল ধারনা: বিয়ে হলেই সমস্যা কমে যাবে

আমাদের সমাজে যেসব অদ্ভুত ধারণা প্রচলিত রয়েছে তার মধ্যে একটি হলে, বিয়ে দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে। ছেলে টো টো করে ঘুড়ে বেড়ায়, বিয়ে দিয়ে দাও। মেয়ের নানা ধরনের সমস্যা, বিয়ে দিয়ে দাও। কেবলমাত্র উদাহরণের জন্য লিখলাম। বাস্তবতা হয়ত আরও করুণ। 
 
গ্রুপে যেসব পোস্ট আসে ধারনা করি তার মধ্যে সর্বোচ্চ বিয়ে সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে। হাজারটা সমস্যার মধ্যে পোস্টদাত্রী বিয়ের ব্যাপারটা এমনভাবে ফোকাস করেন যে পোস্ট পড়ে ধারনা হয় বিয়ে হলে তার এসব সমস্যা চলে যাবে অথবা কমে যাবে। রুকইয়াহ করে আপডেট জানানোর সময়ও একই বিষয় লক্ষনীয়। বিয়ে আসলো না, বিয়ে হল না, বিয়ের কোনো কথাই হচ্ছে না, এসেছিল আর জানায় না, এসেছিল ভেঙে গিয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে কিছু কথা বলতে ইচ্ছে হয়। বলি না। এমনিতেই যথেষ্ঠ দুর্নাম কামিয়েছি। 
 
কি করা উচিত আর কি ঘটতে পারে? 
 
যার রুকইয়াহ সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে তাকে রুকইয়াহতে মনযোগ দেয়া উচিত প্রবলভাবে। একই সাথে যদি নিজের পরিবারেরও সমস্যা থাকে তাহলে তার সমস্যা কিভাবে দূর করা যায় সেদিকেও নজর দিতে হবে। কারণ বাংলাদেশে বিয়ের ব্যাপারটা শুধু মাত্র পাত্র-পাত্রী এবং সাক্ষীর উপর নয়। বরং ভাই-বোন, চাচা-চাচী, দাদা-দাদী সবার মতামতের উপর বিয়ে। সবাই রাজি, অনর্থক একজন রাজি না। তখন বিয়ে ভেঙে যায়। 
 
ধরা যাক, কারও সমস্যা ছিল সে রুকইয়াহ করেছে। সমস্যা কমার পর বিয়ে হয়েছে। কিন্তু সে পুরোপুরি সমস্যা মুক্ত হয় নি। সাময়িক ভাল লাগার পর অফ করে দেয়। কারণ বিয়েতো হয়েই গিয়েছে আর রুকইয়াহর কি দরকার! পরে দেখা যায় স্বামির সাথে গন্ডগোল, শ্বশুড়িবাড়িতে ভাল লাগে না, ঝগড়া-ঝাটি। আর আল্লাহ না করুক, যদি সংসারটা ভেঙেই যায় তবে আপনিই ভেবে দেখেন আপনার অবস্থা আগের চেয়ে ভাল ছিল নাকি খারাপ ছিল। 
 
প্রবলেমের কারণে আপনি হুট হাট রেগে যাবেন, খারাপ ব্যবহার- গালাগাল করবেন, কতদিন শ্বশুড় বাড়ির লোকজন সহ্য করবে? আবার সম্ভবনা আছে যখন এই অবস্থা দেখবে আপনাকে জোর করে কবিরাজের কাছে নিয়ে যাবে, তাবিজ লাগিয়ে দিবে। আপনি সেগুলো মানতে না চাইলে আরেকদফা চোটপাট। আর সেখানো যদি সমস্যাগ্রস্থ মানুষ থাকে তাহলেতো আরও করুণ অবস্থা হয়ে যায়।
 
বাবার বাড়িতে ছিলেন অবিবাহিতা। আবার বাবার বাড়িতে ফিরে এলেন ডিভোর্সী হয়ে। সন্তানসহই হোক বা সন্তান ছাড়াই হোক, আপনিই চিন্তা করেন আপনার অবস্থার উন্নতি হলে বিয়ের দ্বারা, নাকি অবনতি হল। যে বাবার বাড়ির লোকজনের সাথে আগে থেকেই অশান্তি ছিল, যাদের থেকে রেহাই পেতে আপনি নিজের বিয়ের ফিকির করতেন তাদের মাঝেই ফিরে এলেন সংসার ভেঙে! 
 
এমন ঘটনা কি নেই? আছে।
 
আমি বলছি না বিয়ে করবেন না বা বিয়ের ব্যাপারে চিন্তা করবেন না। অবশ্যই করেন। আমল করেন। কিন্তু সমস্যার মূল নিজের ভিতর থেকে উপড়ে ফেলতে সচেষ্ট হোন। বিয়ে ইন শা আল্লাহ হবে, সংসারও শান্তির হবে। আর দীর্ঘদিন রুকইয়াহ করতে করতে আপনার যে অভিজ্ঞতা হবে, যে আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তা আসবে তা দিয়ে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন নতুন সংসারে কোনো ঝামেলা হলে তা রুকইয়াহ রিলেটেড কিনা। যদি রিলেটেড হয় তাহলে নিজে থেকেই রুকইয়াহ করতে পারেন। গ্রুপে পোস্ট এবং সাজেশনের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করা লাগবে না। 
 
[যা বক্তব্য ছিল পরিষ্কার করে লিখতে পেরেছি কিনা বুঝতে পারছি না। ভুল ত্রুটি একান্তই আমার]

No comments:

Post a Comment